Posts

কলকাতায় "রবীন্দ্র-নৃত্যশিল্প" গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ

Image
গত ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪ বিড়লা একাডেমী অফ্ আর্ট এন্ড কালচারে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হলো ডঃ কাবেরী চট্টোপাধ্যায়ের গবেষণা গ্রন্থ রবীন্দ্র-নৃত্যশিল্প। শ্রীমতী কাবেরী চট্টোপাধ্যায় স্বনামধন্য মণিপুরী নৃত্যশিল্পী এবং নৃত্য বিষয়ের গবেষিকা। আবাল্য শান্তিনিকেতন আশ্রমে পড়াশোনা এবং সংগীতভবনে নৃত্যগুরুদের কাছে শিক্ষা তাঁকে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট নৃত্যকলা বিষয়ে আগ্রহী করে তোলে। সেই আগ্রহের ফলশ্রুতি এই গ্রন্থ। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ পরলোকগত অধ্যাপক সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি তথ্যানুসন্ধানের কাজটি শুরু করেন। গবেষণার প্রয়োজনে দেখা করেন শান্তিনিকেতনে নৃত্যের সাথে যুক্ত থাকা কৃতবিদ্য মানুষদের। রবীন্দ্রনাথ নৃত্যকে দেখেছিলেন বিশ্বসৃষ্টির আধারে, পরমাণু থেকে চন্দ্র সূর্যের গতিতে। ভারতবর্ষে রুদ্ধকক্ষের বিলাস থেকে নৃত্যকে তিনি তুলে এনেছিলেন আলোর সামনে। তাঁর আশ্রম বিদ্যালয়ে আয়োজন করেছিলেন এক নতুন বিদ্যাশিক্ষার। নানান নিন্দা অপবাদেও বন্ধ করেননি ছাত্রীদের নৃত্যের পাঠ। পরবর্তী কালে তাঁরই প্রত্যক্ষ প্রভাবে ভারতীয় কলাশিল্পের এই বিশেষ ধারাটির প্রসার ঘটে দেশে বিদেশের সর্বত্র।   এদিনের অনুষ্ঠ...

গ্রন্থ সমালোচনা: শ্রীময়ী মা — নবকুমার বসু

Image
সদ্য শেষ করলাম নবকুমার বসুর উপন্যাস "শ্রীময়ী মা", সারদা দেবীর জীবন অবলম্বনে লেখা দীর্ঘ উপন্যাস। তাঁকে নিয়ে লেখা গ্রন্থের সংখ্যা কম নয়। তাঁর সাক্ষাৎলাভ করেছেন এমন মানুষেরা, এবং পরবর্তীকালে তাঁকে অনুভব করেছেন এমন মানুষেরা অনেকেই মায়ের কথা নিবেদন করেছেন তাঁদের নিজস্ব ভঙ্গিতে। নবকুমার বসুর গ্রন্থটি অন্য আঙ্গিকের মনে হয়েছে, কারণ তাঁর উপন্যাস রচনার নৈপুণ্য। তিনি এখানে সাল তারিখের উল্লেখে ইতিহাসের কথন তৈরী করেননি, বরং সৃষ্টি করেছেন সাধারণের মাঝে থাকা এক রক্তমাংসের মহামানবীর জীবন আখ্যান, চিত্রের পরে চিত্রে, এক শিল্পীর ভূমিকায়। কাহিনীর সূচনা জয়রামবাটি গ্রামের ছয় বছর বয়সের এক শিশু কন্যার বিবাহ সময় থেকে। স্বামীরূপে যাঁকে পেলেন, শিশুকাল থেকে তাঁর সাথে ঘর করার সুযোগ ঘটেনি তাঁর। কিন্তু দুই মনের মাঝে ঘটেছিলো এক অদৃশ্য অবর্ণনীয় সেতু বন্ধন। দুজনেই হয়ে উঠেছিলেন দুজনার মনের মতো, অথচ সবই মনে মনে। যে সামান্য সময়ের দেখা, সেখানেই সেই যুবক শিশু থেকে কিশোরী হয়ে ওঠা এই কন্যাকে প্রস্তুত করেছিলেন এক গভীর মননে, দীক্ষিত করেছিলেন এক চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক বোধে। সেই প্রস্তুত হবার সময়টি বড়ো যত্নে লিখেছেন ঔপন্যাস...

মহামহোপাধ্যায় কালীপদ তর্কাচার্য (১৮৮৮‒১৯৭২)

Image
শ্রী কালীপদ তর্কাচার্য বিংশ শতকের বাংলার এক অসাধারণ সংস্কৃতজ্ঞ মহামহোপাধ্যায় কালীপদ তর্কাচার্যকে নিয়ে এই লেখা। ভারতবর্ষে সংস্কৃত কাব্য-সাহিত্যের ব্যাপ্তি বহু শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত। খ্রীষ্টপূর্ব পঞ্চম শতকে পাণিনি রচিত “অষ্টাধ্যায়ী” গ্রন্থে যে সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রণালী বর্ণিত হয়েছিল তা সৃষ্টি করেছিল এক শক্তিশালী ধ্রুপদী ভাষার। এই সুললিত ভাষায় লেখা হয়েছে কত না অপরূপ সাহিত্য কীর্তির। কালিদাস , শূদ্রক , ভাস , অশ্বঘোষ যেমন ছিলেন সংস্কৃত সাহিত্যের নাট্যকার , তেমনি ভারতীয় দর্শনকে সংস্কৃতের আধারে লিপিবদ্ধ করেছিলেন যাজ্ঞবল্ক্য , রামানুজ , আদি শঙ্করাচার্য , নাগার্জুন , বাৎস্যায়ন , এবং আরো অনেকে। কালীপদ তর্কাচার্য ছিলেন এই বহু সাহিত্যকৃতির এক সেতু বিশেষ। যদিও ভারতীয় ন্যায় শাস্ত্র ছিল তাঁর গবেষণা ক্ষেত্র , তাঁর প্রতিভার দীপ্তি স্পর্শ করেছিল দেবভাষার নানান সাহিত্য কীর্তি। তাঁর সমকক্ষ সংস্কৃত গবেষক সমকালীন সময়ে বাংলায় ছিলেন বিরল। যে বিদগ্ধ পরিবারে তাঁর জন্ম সে কথা বলেই শুরু করবো এই প্রবন্ধ। একাদশ শতকে পাল রাজত্বের সমাপ্তির পরে হিন্দু রাজা আদিশূর কান্যকুব্জ থেকে পাঁচজন সংস্কৃতজ্ঞ ব্রাহ্মণকে নিয়ে আসেন ব...

The camel that tasted a toffee

Image
I was a five-year-old little girl when this story started. We went for a vacation to Jaisalmer, the desert town in Rajasthan, in the winter holidays. First time I travelled in a bus where I could sleep in a small room, called a cabin. I clapped loudly when I shut the door of our cabin and made it our own small place. The bus took one night to reach the city of Jaisalmer. I saw the golden fort standing like a giant yellow palace in front of us. Holding the hand of my father, I walked up to the fort to see the places inside in awe. We visited the old havelis built by the kings and merchant of this part of India. Every old building made of yellow stones was so nicely kept that I loved them. We could not resist to click pictures to keep memories of our tour.  As part of the plan, we hired a jeep to experience the real desert. On the way, we popped into an old desert village where, people said, lived a bunch of ghosts. The village had many broken stone houses kept empty for hundred year...

দিল্লীর প্রবাস জীবনে রবীন্দ্রনাথ

Image
আমার এই গল্পের শুরু ২০০৬ সালে, যখন বাংলার পাততাড়ি গুটিয়ে শুরু করি আমার প্রবাস জীবন। তার আগে দিল্লী ছিল এক বহু দূরের শহর, দেশের রাজধানী, যার খবর পেতাম সংবাদপত্রে। বাৎসরিক ভ্রমণ শেষে এই শহর ঘুরে হাওড়ায় ফেরার ট্রেন ধরা হতো।  কিন্তু ২০০৬ সাল থেকে পাল্টে গেলো সব। সেই দূরের শহরই ধরা দিলো আমার হাতের কাছে, আমার নতুন আবাস হয়ে। চাকরি সূত্রে থালা-বাটি-গ্লাস আর কয়েকটা জামা কাপড় নিয়ে হাজির হলাম রাজধানী শহরে। বেলুড় মঠের কাছে আমার বাড়ি হলেও চিন্তায় চেতনায় রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ঘরের মানুষ, আর বিবেকানন্দ দূরের অতিথি। শুধু তো রবীন্দ্রনাথের গান শেখা নয়, ইস্কুলের নানান শ্রেণীতে রবীন্দ্রনাথের কতকিছু পড়তে হয়েছে। তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ সবকিছুতেই আবিষ্কার করতাম এক দারুন আগ্রহ। খানিক বোঝা আর না বোঝার আড়ালে বিরাজ করতেন তিনি, বিরাট দাড়ি গোঁফের সম্ভার নিয়ে। কলেজে পড়তে তখনকার “নন্দন” পত্রিকায় চিঠি লিখেছিলাম কেন রবীন্দ্রনাথ আমার প্রথম প্রেমিক। এহেন ভাবরাজ্যের বাসিন্দা হয়ে যখন এসে পড়লাম এই গোবলয় বেষ্টিত শহরে, ভেবেছিলাম ছাড়তে হলো ভালোলাগার অনেক কিছু। কর্ম আর অর্থ উপার্জনের আবর্তে হারিয়ে যায় তো কত...